Advertisement
  • হোম
  • বাণিজ্য
  • বৃহত্তর রাজনৈতিক ঐকমত্য না হলে কোনো সংস্কার টেকসই ...

বৃহত্তর রাজনৈতিক ঐকমত্য না হলে কোনো সংস্কার টেকসই হবে না

প্রকাশ: ২৩ অক্টোবর, ২০২৪

সংস্কারের বিষয়ে বৃহত্তর রাজনৈতিক ঐকমত্য না হলে কোনো সংস্কার টেকসই হবে না। অতীতেও দেখা গেছে, ঐকমত্য না থাকায় অনেক সংস্কার টেকেনি। দেশে যে গোষ্ঠীতন্ত্র তৈরি হয়েছে, তারা সব সময় সংস্কারের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ফলে এবার রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গীকার নিশ্চিত করা প্রয়োজন, যেসব সংস্কার এখন করা হবে, নির্বাচিত সরকার সেগুলো টিকিয়ে রাখবে।

বাঙলার পাঠশালা আয়োজিত ‘অর্থনৈতিক সংকট ও উত্তরণে করণীয়’ শীর্ষক আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরসি মজুমদার মিলনায়তনে আজ বুধবার বিকেলে অনুষ্ঠিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মো. হেলাল উদ্দিন। সঞ্চালনা করেন বাঙলার পাঠশালার প্রতিষ্ঠাতা আহমেদ জাভেদ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতিসংঘের মানব উন্নয়ন প্রতিবেদন কার্যালয়ের সাবেক পরিচালক সেলিম জাহান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেলিম জাহান বলেন, অর্থনীতি নিছক কারিগরি বিষয় নয়। এর সঙ্গে রাজনীতি ও সমাজব্যবস্থার সম্পর্ক আছে। সেই সঙ্গে আইনি দিকও আছে। সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংস্কারের যেমন আপাত দিক আছে, তেমনি দীর্ঘমেয়াদি ও মৌলিক দিকও আছে। দুটি একসঙ্গে করা দরকার।

আলোচনায় অংশ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, বিগত সরকার দেশের সবকিছুকে প্রবৃদ্ধিকেন্দ্রিক করে ফেলেছিল। সেটি করতে গিয়ে মানব উন্নয়নে যে গুরুত্ব দেওয়া দরকার ছিল তা করা হয়নি। এ কারণে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ কমানো হয়েছে। ফলে উচ্চ প্রবৃদ্ধি হলেও কর্মসংস্থান সেভাবে বাড়েনি।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বাংলাদেশে প্রতিযোগিতামূলক বাজার কাঠামো ভেঙে পড়েছে। সবকিছু নির্দিষ্ট কিছু গোষ্ঠীর হাতে কুক্ষিগত হয়ে পড়েছে। দেশে কোনো খাতে তিন-চারটির বেশি কোম্পানি দেখা যায় না। সরবরাহব্যবস্থার সবকিছুই তারা নিয়ন্ত্রণ করে। তারা সরবরাহব্যবস্থা–সংক্রান্ত তথ্যও দিতে চায় না। ফলে গবেষণাও করা যায় না।

অনুষ্ঠানে আলোচকেরা দেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক সংকটের জন্য সামষ্টিক অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও কর্মসংস্থানের অভাবকে দায়ী করেন। তাঁরা বলেন, আগামী দুই বছরে বা মধ্য মেয়াদে যে কর্মসংস্থান বাড়বে, তেমন সম্ভাবনা কম। কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়াতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারকে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। তা না হলে আগে যে পরিস্থিতি ছিল, তা–ই থেকে যাবে, উত্তরণ হবে না।

সভাপতির বক্তব্যে হেলাল উদ্দিন বলেন, যেকোনো রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে সবার আগে দরকার রোগনির্ণয়। এটি ঠিকঠাক করা গেলে রোগ অর্ধেক ঠিক হয়ে যায়। মূল্যস্ফীতি নিয়ে নিজের এক গবেষণার তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশে পাঙাশ মাছের দাম গত ১০ বছরে খুব বেশি বাড়েনি। কারণ, উৎপাদন ব্যয় কমেছে। তাই পাঙাশের বাজারে সিন্ডিকেট খুঁজে পাওয়া যায় না। চালের দামের ক্ষেত্রেও একই বিষয় প্রযোজ্য। তাই উৎপাদন খরচ কমানো গেলে বাজারে জিনিসপত্রের দাম কমে যায়।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক অতনু রব্বানী, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কাজী জাহেদ ইকবাল, সাংবাদিক আমিন আল রশিদ, ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক নাবিলা ফারহিন প্রমুখ।

Lading . . .