Advertisement

রাজশাহীতে আম পাড়া শুরু, ৪৮ কেজিতে মণ

প্রকাশ: ১৬ মে, ২০২৫

বাগান থেকে গুটি জাতের আম নামানো হচ্ছে। গতকাল রাজশাহীর হড়গ্রাম মিয়াপাড়া এলাকায়ছবি: শহীদুল ইসলাম
বাগান থেকে গুটি জাতের আম নামানো হচ্ছে। গতকাল রাজশাহীর হড়গ্রাম মিয়াপাড়া এলাকায়ছবি: শহীদুল ইসলাম

রাজশাহীতে গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে আম নামানো শুরু হয়েছে। প্রথম দিনই মোকামগুলোতে ৪৮ কেজি মণ ধরে আম বেচাকেনা শুরু হয়েছে। এতে আমচাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অথচ কেজি দরে আম বিক্রি করার সরকারি নির্দেশনা ছিল; যা ব্যবসায়ীরা মানছেন না। আবার কুরিয়ার খরচও অন্য পণ্যের তুলনায় আমের জন্য দ্বিগুণ করা হয়েছে।

রাজশাহীতে ‘ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার’ অনুযায়ী, প্রথম দিন গুটি জাতের আম বাজারে নামানোর কথা, কিন্তু আমের বাজার প্রথম দিনই দখলে নিয়েছে গোপালভোগ। চাষিরা বলছেন, গাছে আম পেকে গেছে। তাই তাঁরা বাজারে নিয়ে এসেছেন।

১০ মে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় থেকে জারি করা নির্দেশনায় বলা হয়েছে, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর ও নওগাঁ জেলায় কেজি দরে আম কেনাবেচা করতে হবে। সাধারণত আমচাষিরা তাঁদের উৎপাদিত আম মোকামে গিয়ে আড়তদার বা কোনো ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেন। কিন্তু ব্যবসায়ীরা ৪০ কেজিতে মণ হিসেবে আম না কিনে অঞ্চলভেদে ৪৫ থেকে ৫২ কেজি পর্যন্ত প্রতি মণ ধরেন। এই ব্যবসায়ীরাই আবার বিক্রির সময় প্রতি মণ ৪০ কেজি দরে বিক্রি করেন। এতে আমচাষিরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

রাজশাহীর বড় আমের সবচেয়ে বাজার বসে পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বরে। গতকাল এই বাজারে গিয়ে দেখা যায়, কোনো ব্যবসায়ীই কেজি দরে আম কেনাবেচা করছেন না। তাঁরা ৪৮ কেজিতে মণ হিসাব করে আম কিনছেন।

ব্যবসায়ী মানিক লাল বলেন, আম পাকার পর মণে তিন কেজি ওজন কমে যায়। আর পচা ফাটা—এগুলো বাদ যাবে আরও চার কেজি আর এক কেজি আম আড়তদার নেবে। তাতে ঘাটতি হয়, সে জন্যই তাঁরা ৪৮ কেজি মণ হিসাবেই আম কিনছেন।

ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম বললেন, ‘বানেশ্বর বাজারের আড়তদার বা বণিক সমিতির এটা নিয়ম। আমরা কিনছি ওইভাবে। দিচ্ছিও ওইভাবেই।’

এদিকে যতগুলো কুরিয়ারের পার্সেল সার্ভিস আছে, সব কটিই বানেশ্বর বাজারে আছে। তাদের কাছে আম যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দর দ্বিগুণ হয়ে যায়। এবার প্রতি কেজি আম পাঠানোর খরচ পড়ছে ১২ থেকে ২০ টাকা। ঢাকায় ১২ টাকা, ঢাকার বাইরে দূরত্ব অনুযায়ী ২০ টাকা পর্যন্ত। কুরিয়ার ভেদে এই খরচ কমবেশি রয়েছে। একজন ব্যবসায়ী জানান, তিনি সারা বছর কুরিয়ারের মাধ্যমে তেল পাঠিয়ে থাকেন। ঢাকায় ছয় টাকা কেজি হিসাবে খরচ পড়ে। কিন্তু তাঁদের দাঁড়িপাল্লায় আম ওঠার সঙ্গে সঙ্গে ৬ টাকা হয়ে যায় ১২ টাকা।

এ ব্যাপারে বাজারের জননী কুরিয়ার সার্ভিসের বানেশ্বর শাখার ব্যবস্থাপক ইয়াসিন আরাফাত বলেন, আম কাঁচামাল। এক দিন রেখে দেওয়া যায় না। গাড়ি না ভরলেও পাঠাতে হয়। তখন খরচ বেশি পড়ে যায়। আবার অনেক সময় আম নষ্ট হয়ে গেলে জরিমানাও দেওয়া লাগে।

প্রথম দিনেই বানেশ্বর আমবাজারের দখল ছিল গোপালভোগ আমের। অথচ ঘোষিত ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, ২২ মে থেকে গোপালভোগ আম বাজারে আসার কথা। এ ব্যাপারে কথা হয় ‘দেশজপণ্য’ নামের অনলাইন পোর্টালের মালিক ব্যবসায়ী মনিরুল বেলালের সঙ্গে। তিনি বলেন, বড় গাছগুলোতে আগেই আম পেকে যায়। গত বুধবার তিনি গোদাগাড়ীর কাঁকনহাটের একটি বড় গাছ থেকে আম ভেঙেছেন। সব আম পেকে গেছে। তিনি বলেন, ‘ঠান্ডা ঘরে বসে গরমের আমের ক্যালেন্ডার করলে এ রকমই হবে। ২২ মে গোপালভোগ আম নামানোর দিন ধার্য করা হয়েছে। অথচ ওই সময় আসতে আসতে গোপালভোগ আম শেষ হয়ে যাবে।’

Lading . . .